ওয়েবসাইট কি? ওয়েবসাইট কাকে বলে?

ওয়েবসাইট কি, ওয়েবসাইট কাকে বলে ?

কোন নির্দিষ্ট ওয়েব সার্ভারে রাখা-ওয়েব পেজ, ভিডিও, অডিও, ছবি বা যে কোন ধরণের তথ্য যা ইন্টারনেটের মাধ্যমে পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে  অ্যাক্সেস করা যায়। আমরা যখন আমাদের ব্রাউজার থেকে কোন ওয়েবসাইট কে অ্যাক্সেস করার চেষ্টা করি, তখন সার্চকৃত ওয়েবসাইটটি কোন ওয়েবসার্ভার থেকে এইচটিটিপি প্রোটোকলের মাধ্যমে সমস্ত ফাইলকে একত্রে করে একটি এইচটিএমএল ডকুমেন্ট আকারে আমাদের সামনে প্রদর্শন করে।

ওয়েবসাইট কি

যদি সহজ ভাবে বলতে যাই ওয়েবসাইট কি তাহলে-আমরা ব্রাউজারে (facebook.com) লিখে সার্চ করার পর কি পাই? ফেসবুক দেখতে পাই, এই ফেসবুক একটা ওয়েবসাইট আবার itnuthosting.com লিখে সার্চ করলে আমরা আইটি নাটের ওয়েবসাইট দেখতে পাই, অর্থাৎ এক কথায় কোন ডোমেইন নাম লিখে সার্চ করার পর আমরা যা দেখতে পাই তাই হলো ওয়েবসাইট।
একটা ওয়েবসাইটে বেশ কিছু ওয়েব পেজ বা পৃষ্ঠা থাকে । ওয়েব পেজ বা পৃষ্ঠা মূলত একটি html document যা http protocol এর মাধ্যমে ওয়েব সার্ভার থেকে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ওয়েব ব্রাউজারে স্থানান্তরিত হয়। আর এই সমস্ত উন্মুক্ত ওয়েবসাইট গুলিকে সমষ্টিগতভাবে  “WWW” অর্থাৎ (ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব বা বিশ্বব্যাপী জাল) নাম বলা হয়ে থাকে।
যতই দিন যাচ্ছে প্রযুক্তির উন্নয়ন ও ব্যবহার ততই  বৃদ্ধি পাচ্ছে । তাই বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগের পাশাপাশি, ব্যবসায়ীক কাজের জন্যও ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েই চলেছে । প্রতিটি ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান নিজেদের পণ্য ও সেবা একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সবার সামনে প্রকাশ করছে । ফলে তারা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তাদের ব্যবসা প্রসার সহ নানাবিধ সুবিধা পাচ্ছে

ডায়নামিক ওয়েবসাইট কি

একটি ডাইনামিক ওয়েবসাইট হল ডায়নামিক ওয়েব পৃষ্ঠাগুলির একটি সংগ্রহ যার বিষয়বস্তু গতিশীলভাবে পরিবর্তিত হয়। এটি একটি ডাটাবেস বা কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (CMS) থেকে সামগ্রী অ্যাক্সেস করে। অতএব, আপনি যখন ডাটাবেসের বিষয়বস্তু পরিবর্তন বা আপডেট করেন, তখন ওয়েবসাইটের বিষয়বস্তুও পরিবর্তিত বা আপডেট হয়।
একটি ডায়নামিক ওয়েবসাইট ক্লায়েন্ট-সাইড স্ক্রিপ্টিং বা সার্ভার-সাইড স্ক্রিপ্টিং বা উভয়ই গতিশীল বিষয়বস্তু তৈরি করতে ব্যবহার করে। উদাহরণস্বরূপ, যখন একটি ব্রাউজার সার্ভারে একটি অনুরোধ পাঠায়, সার্ভারটি অ্যাপ্লিকেশন সার্ভারের সাথে যোগাযোগ করে এবং ডাটাবেস সার্ভারের সাথে বিষয়বস্তু আনার জন্য আরও যোগাযোগ করে, যা ব্যবহারকারীর অনুরোধ এবং প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী কাস্টমাইজ করা হয়।

ওয়েবসাইট কয় প্রকার ও কি কি?

ওয়েবসাইট মূলত তিন প্রকার যেমনঃ ইকমার্স , বিজনেস , পোর্টফিলিও ওয়েবসাইট। 

ইকমার্স ওয়েবসাইট কি

বর্তমানে ইকমার্স ওয়েবসাইট সব থেকে জনপ্রিয়। ই-কমার্স ওয়েবসাইট (eCommerce Website) -এ ইন্টারনেটের মাধ্যমে পণ্য বা সেবা ক্রয়/ বিক্রয় হয়ে থাকে। আধুনিক ইলেকট্রনিক কমার্স সাধারণত ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব এর মাধ্যমে বাণিজ্য কাজ পরিচালনা করে। এছাড়াও মোবাইল কমার্স, ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার ও অন্যান্য আরো কিছু মাধ্যম ব্যবহৃত হয়।

ই কমার্স ওয়েবসাইটের কার্যকরী ৫টি অংশ

ইলেকট্রনিক কমার্স বা ই-কমার্স হচ্ছে এমন একটি মাধ্যম যেখানে কোনো ইলেকট্রনিক সিস্টেম এর মাধ্যমে পণ্য বা সেবা ক্রয়-বিক্রয় হয়ে থাকে। সহজ কথায় বলতে পারি ইন্টারনেট ব্যবহার করে কোনো কিছুবিক্রয় করাকেই আমরা ই–কমার্স বলতে পারি। ইন্টারনেট বা ইকমার্স ব্যবসা শুরু করার সময় যে প্রাথমিক কাজগুলি করা দরকার তা হ’ল একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা। ই কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করাটা ই কমার্স ব্যবসায়ীদের জন্য অনেক বেশি জরুরি। মদিু দোকানের ক্ষেত্রে দোকান যেমন গুরুত্বপূর্ণ, র্ণ তেমনি ই-কমার্স ব্যবসা করার জন্য ই-কমার্স ওয়েবসাইটও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।র্ণ চলনু,জেনে নেওয়া যাক, ই কমার্স ওয়েবসাইটের গুরুত্বপূর্ণ ৫ টি অংশ সম্পর্কেঃ

১ – ব্যবহারকারী বান্ধব ইন্টারফেস এবং বিশ্বাসযোগ্য কনটেন্টঃ

ব্যবহারকারী বান্ধব ইন্টারফেস বলতে এমন ইন্টারফেসকে বোঝায় যেটা সহজবোধ্য এবং সাধারন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন যেখানে কমান্ডগুলো দ্রুত কাজ করে। একটি ওইয়েবসাইটের ইন্টারফেস যদি জটিল হয় সেখানে ব্যবহারকারীরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। তাই ই কমার্স সাইটের ইন্টারফেসকে সবসময় ব্যবহারকারী বান্ধব হওয়া বাঞ্চণীয়। আবার, ক্রেতারা একটি পণ্য না কেনা পর্যন্ত তারা “অনভবু ” করবে না, তাই তাদের যতটা সম্ভব পণ্যের সেরা ছাপ দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।র্ণ পন্য সম্পর্কে নানারকম তথ্য দিয়ে কন্টেন্ট তৈরি করে ক্রেতাদের বিশ্বাস অর্জন করতে হবে।

২ – ই কার্ট এবং ব্যবহারকারী বান্ধব চেকআউট প্রক্রিয়াঃ

ই-কমার্স অভিজ্ঞতার জন্য একটি ভালো চেকআউট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি একটি ওয়েবসাইটের বিশ্বাসযোগ্যতা যোগ করে। চেকআউট প্রক্রিয়া যদি ব্যবহারকারী বান্ধব না হয় তাহলে ক্রেতা সন্দেহ করতে পারে বা বিভ্রান্ত হতে পারে। যার ফলে ক্রেতা পন্যটি ক্রয় না করে চলে যেতে পারে। তাই এমন একটি চেকআউট প্রয়োজন যে চেকআউট ক্রেতাকে সর্বোত্তম অভিজ্ঞতা প্রদান করবে। উদাহরণস্বরুপ বলা যায়, চেক আউটের সময় যদি ক্রেতাকে একাধিক পেজে যেতে হয় এবং অনেকবার ক্লিক করতে হয় তাহলে ক্রেতা বিরক্ত হতে পারে এবং পন্য ক্রয় বাতিল করতে পারে। ব্যবহারকারী বান্ধব চেক আউট প্রক্রিয়ার জন্য কিছুবিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখতে রাখতে হবে। সেগুলো হলোঃ
● অ্যাকাউন্ট নিবন্ধনকে ঐচ্ছিক করা অথবা কমপক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লগইন করার জন্য অফার করা।
● গ্রাহকদের সহজেই কার্ট আপডেট করার অনমুতি দেওয়া।
● চেক আউট প্রক্রিয়াকে একটি পৃষ্ঠায় রাখা।
● ত্রুটিগুলি সামনে দেখানো।
● চেকআউটের অগ্রগতি প্রদর্শন করা।

৩ – পণ্যের বিবরণ এবং ভালো মানের ছবিঃ

ই কমার্স ওয়েবসাইটে গ্রাহকদেরকে একটি পণ্য প্রদর্শন করার জন্য সবচেয়ে মলূ্যবান সম্পদ হচ্ছে ভালো মানের বাস্তব ছবি ব্যবহার করা, এবং যতটা সম্ভব গ্রাহকদের কাছাকাছি এটি আনতে পণ্যের বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া। ই কমার্স ওয়েবসাইটে পণ্য ক্রয়ের সময় ক্রেতা পণ্যটিকে স্পর্শ করতে পারে না, তাই পণ্যের বিবরণের সাথে ছবি যুক্ত করে দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এবং অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে ছবিগুলো যেন ভালো এবং উচ্চ মানের হয়।

৪ – মোবাইল ডিভাইসে কার্যকারিতাঃ

বর্তমানে মোবাইলের ব্যবহার দিনদিন খুব দ্রুতগতিতে বদ্ধিৃ পাচ্ছে। যার ফলে একটি ওয়েবসাইটকে রেস্পন্সিভ বা মোবাইল ডিভাইসে কার্যকর করা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাড়িয়েছে। একটি ওয়েবসাইট যদি ইউজার ফ্রেন্ডলি হয় অর্থাৎ মোবাইল রেস্পন্সিভ হয় তাহলে ওই ওয়েবসাইটে ভিজিটর আসতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করবে এবং ওই ওয়েবসাইটের ভিজিটর দিন দিন বদ্ধিৃ পাবে। যদি মোবাইল রেসপনসিভ ওয়েব সাইট না হয় তাহলে ডেক্সটপ থেকে যখন একজন ক্রেতা ভিজিট করবে তখন ওয়েবসাইট টা কিছুটা ঠিক থাকলেও মোবাইলের মাধ্যমে যখন ওয়েবসাইট ভিজিট করবে তখন সেই ওয়েবসাইট এর সকল ডিজাইন ভেঙ্গে যাবে এবং ওয়েবসাইট টা ঠিক মত কাজ করবে না। এতে করে ওই ওয়েবসাইটের ভিজিটর হ্রাস পাবে এবং ওয়েবসাইটের লিংক হারাবে।তাই যখন একটি ই কমার্স ওয়েবসাইট বানানো হয় তখন সেটা যেন মোবাইল ডিভাইসেও কার্যকর হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

৫ – গ্রাহক সহায়তা সিস্টেমঃ

ই-কমার্স ওয়েবসাইটগুলি সাধারনত অনেক বিস্তৃত হয়ে থাকে। এখানে প্রযুক্তিগত অনেক ত্রুটি থাকতে পারে অথবা গ্রাহকদের কিছুবঝু তে অসুবিধা হতে পারে। এই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য 24/7 গ্রাহক সহায়তা সিস্টেম থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।র্ণ আপনার গ্রাহকদের জন্য এটি খুবই ভালো যে আপনি তাদেরকে সাহায্যের জন্য সবসময় প্রস্তুত রয়েছেন। কোনো সমস্যা হলে যত দ্রুত সম্ভব সমস্যার সমাধান করা বাধ্যতামলকূ । আপনাকে বুঝাতে হবে যে আপনি আসলে আপনার গ্রাহকদের সর্বোচ্চ মলূ্যায়ন করে থাকেন এবং তাদের সাহায্য করতে চান।গ্রাহকদের পন্য নিয়ে অভিযোগ থাকতে পারে, তাই তার দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। কেননা গ্রাহকরা দ্রুত রেসপন্স না পেলে বিশ্বাসহীনতায় চলে যায়। যার ফলে ই কমার্স ওয়েবসাইটে নেতিবাচক প্রভাবে পড়তে পারে।

পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট কি

পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট হচ্ছে বাক্তিগত তথ্য তুলে ধরতে পারবেন। যেমন একজন ফ্রীলান্সার তার নিজের ওয়েবসাইটে  নিজের সার্ভিস সম্পর্কে তুলে ধরতে পারবে।  একজন ফটোগ্রাফার তার ব্যক্তিগত কাজ গুলো নিজের পোর্টফোলিও ওয়েবসাইটে তার কাজ গুলো তুলে ধরতে পারবে। আপনি যদি এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে পড়ে থাকেন তবেন এতোক্ষণে হয়তো বুঝেই গেছেন পোর্টফোলিও কতটা গুরুত্বপূর্ণ একজন ফ্রিল্যান্সার এর কাজ পাওয়ার  জন্য। পোর্টফোলিও ছাড়া একটি প্রজেক্ট ও বায়ার এর কাজ  হাতে পাওয়া আকাশের চাঁদ হাতে পাবার মতোই দুষ্প্রাপ্য!
ধরেন  আপনি একটা বাড়ি বানাবেন এবং এটির ডিজাইন এর জন্য একজন ইঞ্জিনিয়ার এর খোজ করছেন। যখন আপনি ইঞ্জিনিয়ার কে গিয়ে বলবেন আপনার বাড়ি টা এমন হবে, প্রতি ফ্লোরে ৪ টা বেডরুম থাকবে, প্রতি বেডরুমে বাথরুম থাকবে, কিচেন থাকবে তখন ইঞ্জিনিয়ার এরকম কিছু ডিজাইন আপনাকে দেখিয়ে দিবে পছন্দ করার জন্য আর আপনি সেখান থেকে আপনার পছন্দ অনুযায়ী ডিজাইন নিজের জন্য নিতে পারবেন আর চাইলে সেই ডিজাইনে ইচ্ছেমতো পরিবর্তন ও করে নিতে পারবেন। এরপর সে যে বাড়িগুলো তৈরি করেছে সেগুলোও আপনি দেখলেন ও তার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে একটু ধারণা পেলেন ও তারপর তো আপনি তাকে সেই কাজের জন্য নির্বাচন করেন এবং তাকে সিলেক্ট করবেন।
আশা করি আজকে আপনারা ওয়েবসাইট সম্পর্কে তথ্য পেয়েছেন। ব্লগটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার কমেন্ট করবেন। 

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *