তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কি?

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কি?

তথ্য প্রযুক্তিঃ উপাত্ত হল তথ্যের ক্ষুদ্রতম একক বা কাঁচামাল। যে প্রযুক্তির মাধ্যমে উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণ করে তথ্য তৈরী, প্রক্রিয়াকরণ, সংরক্ষণ, তথ্যের সত্যতা ও বৈধতা যাচাই, আধুনিকীকরণ, পরিবহন, বিপনন ও ব্যবস্থাপনা করা হয় তাকে তথ্য প্রযুক্তি বা ইনফরমেশন টেকনোলজি (CT) বলে। এক কথায় উপাত্তকে তথ্যে রুপান্তর করা ও তথ্য ব্যবস্থাপনার সংগে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিকে তথ্য প্রযুক্তি বলে।

যোগাযোগ প্রযুক্তিঃ কোন ডেটা বা ইনফরমেশন এক স্থান হতে অন্য স্থান কিংবা এক কম্পিউটার হতে অন্য কম্পিউটার কিংবা এক ডিভাইস হতে অন্য ডিভাইসে অথবা একজন অন্যজনের নিকট আদান প্রদানের প্রক্রিয়াকে যোগাযোগ প্রযুক্তি বা কমিউনিকেশন টেকনোলজি (CT) বলে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কি ?

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি একটি প্রযুক্তির শাখা যাতে তথ্যের সংগ্রহ, সংস্করণ, সমস্যা সমাধান, সংক্ষিপ্ত, সংবেদনশীলতা এবং তথ্য আদান প্রদান সহ বিভিন্ন উপায়ে যোগাযোগ করা হয়। এটি তথ্য এবং ডেটা প্রযুক্তিগত উপায়ে প্রক্রিয়া করে এবং তথ্য সামাজিক এবং পেশাদার প্রসারণ ও আদান-প্রদানে ব্যবহৃত হয়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সকল বিজ্ঞান নিয়ে কাজ করে ।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এর উদাহরণ হলো:

১ .ইন্টারনেট এবং ওয়েব : ইন্টারনেট এবং ওয়েব প্রযুক্তি তথ্যের ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি তথ্যের অ্যাক্সেস, সংস্করণ, শেয়ারিং, এবং প্রসারণ সহ বিভিন্ন প্রযুক্তির সাথে যুক্ত করে।

২ .মোবাইল কমিউনিকেশন : মোবাইল প্রযুক্তি সাধারণ লোকের মাধ্যমে তথ্য আদান প্রদান, সংক্ষিপ্তসারণ, মৌখিক এবং লিখিত যোগাযোগ সহ বিভিন্ন তথ্য উপায়ে সেবা প্রদান করে। এটি তথ্য প্রযুক্তি এর অন্যতম সেবা ।

৩ .সোশ্যাল মিডিয়া : সোশ্যাল মিডিয়া প্রযুক্তির মাধ্যমে লোকের মধ্যে যোগাযোগ এবং তথ্য প্রচার সহ অংশ নেওয়ার বড় দিকে সহজ হয়ে আসে।

৪ .ইমেল এবং অনলাইন মেসেজিং : ইমেল এবং অনলাইন মেসেজিং সিস্টেম প্রযুক্তির মাধ্যমে অকেন দূরবর্তী স্থানে খুব সহজে তথ্যের আদান প্রদান বিশেষভাবে সহজ করে।

৫ .ভিডিও কনফারেন্সিং : ভিডিও কনফারেন্সিং প্রযুক্তির সাহায্যে দুরবর্তী স্থানে বসেই সহজে ভিডিও কলে মুখোমুখি যোগাযোগ এবং তথ্য আদান-প্রদান সহ করা যায়

সংক্ষেপঃ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি হলো তথ্য এবং ডেটা প্রক্রিয়া এবং যোগাযোগের সাথে সংযোজনের জন্য বিভিন্ন প্রযুক্তির সেট, যার মাধ্যমে তথ্য প্রসারণ, সংক্ষেপ, সামাজিক যোগাযোগ, আদান-প্রদান এবং সম্প্রসারণ সহ করা যায়।

তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মধ্যে পার্থক্য কী?

তথ্য প্রযুক্তি (Information Technology) বলতে বুঝায় কোনো ডিভাইস বা কম্পিউটার যে পদ্ধতিতে ডাটা/ উপাত্তকে ডিভাইসের মধ্যে জমা রাখে, প্রয়োজনে খুঁজে বের করে আনে, সেগুলোকে প্রসেস করে তথ্য বের করে বা সিদ্ধান্ত নেয়, ব্যবহারকারীকে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করে ইত্যাদি। বিভিন্ন কম্পিউটার হার্ডওয়ার ও সফটওয়ার এর সাথে সংশ্লিষ্ট।

যোগ প্রযুক্তি (Communication Technology) বলতে বুঝায় বিভিন্ন ডিভাইস বা কম্পিউটার গুলো আলাদা লোকেশনে থাকার পরেও একে অপরের সাথে যে পদ্ধতি অবলম্বন করে যোগাযোগ করে, প্রয়োজনীয় তথ্য আদান প্রদান করে, একত্রে বৃহৎ সিস্টেম তৈরি করে, সমন্বিত সেবা প্রদান করে, কোনো রিসোর্স/ সেবাকে শেয়ার করার সুযোগ করে দেয় ইত্যাদি। বিভিন্ন নেটওয়ার্কিং ডিভাইস ও প্রটোকল এর সাথে সংশ্লিষ্ট।

ব্যাপক ডিজিটালাইজেশন এর প্রভাবে বর্তমানে এই দুটি বিষয় একে অপরের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত এবং এদেরকে একসাথে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (Information and Communication Technology) বলে অভিহিত করা হয়।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উপকরণসমূহ

  • হার্ডওয়্যার
  • সফটওয়্যার
  • ডাটা
  • দক্ষ জনশক্তি
  • প্রক্রিয়া
  • নেটওয়ার্ক

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ১০ টি ব্যবহার

  • শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার
  • চিকিৎসা ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার
  • গবেষণা কাজে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার
  • কৃষি ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার
  • বিনোদন ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার
  • পরিবেশ ও আবহাওয়ায় তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার
  • ব্যাক্তি বা সামাজিক কাজে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার
  • প্রচার ও গণমাধ্যমে তথ্য তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার
  • ব্যাংক মাধ্যেম তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার
  • ক্যারিয়ারে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার

দৈনন্দিন জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার

এতক্ষণ আমরা জানলাম তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কোথায় কোথায় ব্যবহার করা হয়। এখন আমরা আর্টিকেলের এই অংশে জানবো দৈনন্দিন জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে। বর্তমানে এখন সারা বিশ্বে দৈনন্দিন জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
সেজন্য আমাদের দৈনন্দিন জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার করে থাকি। সেগুলো সম্পর্কে আমরা পোস্টটির এই অংশে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব। এখন যেকোনো সময় অনলাইন টিকিট সিস্টেমের মাধ্যমে ঘরের বাইরে বা স্টেশনে না গিয়েই ট্রেনের এবং প্লেনের টিকিট কেনা যায় খুব সহজে।
অনলাইনে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল ধরনের পত্রিকা যেগুলো ইন্টারনেটে থাকে সেগুলো সুন্দরভাবে পড়া যায়। ইন্টারনেটের সহায়তায় ঘরে বসেই প্রয়োজনীয় পণ্যের অর্ডার দেওয়া এবং বিল পরিশোধ করা যায়। এবং টাকা-পয়সা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে অনেক সহজে পাঠানো যায়। বিভিন্ন ধরনের বই পড়া বা ই-বুক সুবিধা পাওয়া যায়। শুধুমাত্র দৈনন্দিন জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার করার মাধ্যমে।

তাই আমরা নিচে কিছু দৈনন্দিন জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে জানব।

চিকিৎসা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার

চিকিৎসা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার অত্যন্ত ব্যাপক হিসেবে করা হয়। যখনই পরিবারের কেউ যেমনঃ নানা নানি, দাদা-দাদী, মা বাবা ইত্যাদি যে কেউ অসুস্থ হলে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে ডাক্তারের কাছ থেকে পরামর্শ নেয়া যায় খুব সহজে। এবং অনলাইনে ডাক্তারের সেবা দ্রুত পাওয়া যায়।সেজন্য আমাদের অনেক ক্ষেত্রেই খরচ কম হয়।

শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার

দিন দিন শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েই চলেছে। যেমন- বর্তমানে এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে অনলাইনে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ঘরে বসেই পরীক্ষার ফলাফল বা রেজাল্ট জানা যাচ্ছে খুব সহজেই। এছাড়াও মোবাইল ফোন ব্যবহার করে টাকা আদান-প্রদান করা যায়।
কিংবা অনলাইন ও ইন্টারনেট ব্যবহারে ঘরে বসে চাকরির দরখাস্ত করা যায় এবং পরীক্ষার প্রবেশপত্র অনলাইন থেকে প্রিন্ট করা যায়। তাছাড়া যেকোনো সময় যেন শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা নিয়মিত করে সেজন্য, শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক অ্যাসাইনমেন্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে বলা যায়, শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও  যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক।

কৃষি ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার

কি সে ক্ষেত্রে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। বর্তমানে এখন কৃষকদের কোথাও যেতে হয় না যে কোন সমস্যার জন্য। তারা ঘরে বসেই কৃষি বিষয়ক কর্মকর্তার সাথে খুব সহজেই যোগাযোগ করতে পারে। তার ফলে তাদের সময় শ্রম অর্থ ইত্যাদি থেকে বেঁচে যায়। তাছাড়া এখন কৃষকেরা যেকোনো বিষয়ের তথ্য ঘরে বসেই পেয়ে যাই। সেজন্য কৃষকেরা আর্থিকভাবেও অনেক লাভবান হয়ে থাকে। তার ফলে যে কোন দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি ঘটানো যায়।

পরিবেশ এবং আবহাওয়ায় প্রযুক্তির ব্যবহার

পরিবেশ এবং আবহাওয়ার ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেননা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সহায়তায় ঘরে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেশের পরিবেশ ও আবহাওয়া সম্পর্কে মানুষ বিস্তারিতভাবে জানতে পারছে। যেমন বৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প ইত্যাদি পূর্বাভাস তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সহায়তায় ঘরে বসে পাওয়া যায়। সেজন্যই মূলত বলা যায়, আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে জড়িত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *