বিটকয়েন (Bitcoin) বা ক্রিপ্টোকারেন্সি (Cryptocurrency) ইতিমধ্যে গোটা দুনিয়ায় নিজের পরিচিতি তৈরি করেছে। ভার্চুয়াল এই মুদ্রা নিয়ে জানার আগ্রহ যেমন বেড়েছে, তেমনই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বিটকয়েনে অর্থ বিনিয়োগের চিন্তা। এরই মধ্যে মাথা চাড়া দিয়ে সামনে এসেছে এনএফটি। মনে করা হচ্ছে এনএফটি তৈরি করা হয়েছে ডিজিটাল সংগ্রহের একটা মাধ্যম হিসেবে। কিন্তু এই নিয়ে জল ঘোলাও কম হচ্ছে না। অনেকেই মনে করছেন NFT খুব তাড়াতাড়ি মুখ থুবড়ে পড়তে পারে। এই সংক্রান্ত বিস্তারিত ধারনা প্রতিবেদনে তুলে ধরা হল।
নন-ফাঞ্জেবল টোকেনের (non-fungible token) গোটা বাংলা হল যার মধ্যে ছত্রাক জন্মাবে না, এনএফটি হল আর্থিক সম্পদের একটা এমন ডিজিটাল রূপ যা সহজে পরিবর্তন করা যাবে। যেমন ১০ টাকার নোটকে দুটি পাঁচ টাকার কয়েনে ভাগ করে নিয়ে অর্থের মুল্য একই থাকে, কিন্তু নন-ফাঞ্জেবলে এটা করা যাবে না। এর মানে এটা এমন একটা অভিনব ডিজিটাল সম্পদ যা সহজেই পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। এটা হতে পারে কোনও বহুমূল্যের বাড়ি অথবা কোনও ভাস্কর্য বা বিখ্যাত মোনালিসার চিত্র। যেটাকে অনুকরণ করে আরেকটি তৈরি করা যেতে পারে কিন্তু মূল জিনিসটি একই থাকবে। এনএফটির মানে হল এটা ডিজিটাল বিশ্বে একটাই আছে। তবে এটা কেনা বা বিক্রি করা যেতে পারে অন্য বস্তুর মতো।
NFT কিভাবে কাজ করে?
সাধারণত বাস্তব জগৎ-এর যেকোন কিছু tokenizing করে এটি এনএফটি তে রূপায়ণ করে বেচা-কেনা করা হয়। অর্থাৎ কোন একটি পণ্যর ডিজিটাল মালিকানা দলিল হচ্ছে NFT।
আর এই এনএফটি ইথেরিয়াম ব্লকচেইন দ্বারা সুরক্ষিত। যার ফলে নতুন NFT মালিকের সমস্ত রেকর্ড পরিবর্তন করা সম্ভব না, এমনকি সেই NFT অনুলিপি করাও সম্ভব না।
NFT সহজেই ডিজিটাল অবজেক্ট থেকে তৈরি করা হয়, এতে বাস্তব এবং ডিজিটাল প্রোডাক্ট উভয় আইটেম অন্তর্ভুক্ত থাকে যার মধ্যে রয়েছে সঙ্গীত, টুইট, জিআইএফ(GIF), আর্ট, ডিজাইনার অবজেক্ট ইত্যাদি। আর যেহেতু NFT অনেক সিকিউর একটি মাধ্যম, তাই এর মাধ্যমে মূল্যবান জিনিসের মালিকানা নিশ্চিত করা এবং বিক্রি করার জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
NFT প্রযুক্তি এথেরিয়াম ব্লকচেইন দ্বারা সুরক্ষিত। এর মাধ্যমে করা বেচাকেনার ফলে নতুন মালিকানার রেকর্ড পরিবর্তন করতে বা কোনও নতুন এনএফটি অনুলিপি কখনই তৈরী করতে পারবেন না। ফলে শুধুমাত্র একটি টোকেন এর মাধ্যমে একজন ক্রেতা তার প্রোডাক্ট এর মালিকানা নিয়ে নিশ্চিত হতে পারছে এবং যেহেতু এনএফটি প্রোডাক্ট কিছুটা মুল্যবান হয় তাই এর নিরাপত্তা ও সুনিশ্চিত করা যাচ্ছে। সহজ ভাষায় বললে এই প্রযুক্তির মাধ্যমে এমন একটি দলিল প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব যেটা সম্পূর্ণ নিরাপদ।
NFT তে কি কি কেনা-বেচা করা যাবে?
একটি মূল্যবান জিনিস এর বিশেষত্ব হচ্ছে আপনি যেটা কিনবেন এটার কেন কপি কখনোই আসবে না।এক কথায় এটি সম্পূর্প্ন আপনার নিজের সম্পত্তি। যেকোন মৌলিক বস্তু/বিষয় মার্কেটে বেচাকেনা করা সহজ । আপনার জমি, গাড়ি ও বিক্রি করতে পারবেন এর মাধ্যমে যদি সেটির আর কোন নকল বা কপি যেন না থাকে। আসুন জেনে নিই আর কি কি ক্রয়- বিক্রয় করা সম্ভব এর মাধ্যমে।
ডিজিটাল আর্ট-
ধরেন আপনার কাছে সুন্দর সুন্দর আর্ট আছে । গাইতে পারেন অসম্ভব সুন্দর গান। তাহলে আপনার তৈরি করা আর্ট আপনি চাইলে বিক্রি করতে পারবেন NFT প্লাটফর্মে। এরকম আরও উদাহরণ- গানের সুর, কবিতা আবৃত্তি, আর্কিটেকচার ডিজাইন এবং আরও অনেক।