ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (Virtual Reality) কি? এবং এটি কিভাবে কাজ করে

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (Virtual Reality) কি? এবং এটি কিভাবে কাজ করে

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি সম্পর্কে অনেকেই শুনেছেন। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বর্তমানে খুব জনপ্রিয় একটি প্রযুক্তি। বিভিন্ন এ্যানিমেশন থেকে শুরু করে মুভি এবং ভিডিও গেমেও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করা হয়। আসুন তাহলে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানি…

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (Virtual Reality) কি?

Virtual অর্থ অপ্রকৃত বা প্রকৃত নয় এমন, Reality অর্থ বাস্তবতা। আর ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (Virtual Reality) অর্থ অপ্রাকৃতিক বাস্তবতা। বাস্তব নয়, তবে বাস্তবের মতো পরিবেশ ও অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারার প্রযুক্তিকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বলে। এটাকে সংক্ষেপে VR বলা হয়। এটিকে এক ধরনের বাস্তবিক অনুকরণ ও বলা যেতে পারে।

এটি 3D এবং 5D প্রযুক্তি ব্যবহার করে কম্পিউটারের মাধ্যমে এমনভাবে তৈরি করা হয়, যেটা আপনি ফিজিক্যালি এবং মেন্টালি দুইভাবেই অনুভব করতে।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ইতিহাস:

পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই এখনও এই প্রযুক্তিটির ব্যবহার শুরু হয়নি। এমনকি বাংলাদেশেও ব্যক্তির পর্যায়ে এটির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায় না। সরকারি কিছু সংস্থা যেমন মিলিটারি, ড্রাইভিং, পাইলটিং ইত্যাদি ক্ষেত্রেই কেবল এটি ব্যবহৃত হচ্ছে।

অনেকের কাছেই এই প্রযুক্তিটি নতুন। তবে এর গোড়াপত্তন হয়েছিল বহু আগেই। ব্লগের এই অংশে আমরা এটির আবিষ্কারের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস সম্পর্কে জানবো।

যুক্তরাষ্ট্রের কম্পিউটার বিজ্ঞানী জেরন ল্যানিয়ার সর্বপ্রথম “Virtual Reality” শব্দটি ব্যবহার করেন। ১৯৮০ এর দশকে তিনি এটি সম্পর্কে গবেষণা করছিলেন এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান যেমন গগলস ও গ্লভস তৈরির কাজ করেন।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রকারভেদ:

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি মূলত ৫ প্রকার, যেগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন কাল্পনিক জগত তৈরি করার জন্য।

Fully Immersive:

সম্পূর্ণ ভার্চুয়াল জগতকে রিয়েলেস্টিক বাস্তবমুখী করার জন্য ফুললি ইমার্সিভ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চুয়াল জগত তৈরি করলে, আপনি মনে করবেন আপনি অন্য একটি জগত রয়েছেন।

Semi Immersive:

কোন একটি ভার্চুয়াল জগতকে আংশিক রিয়েলিস্টিক বাস্তবমুখী করার জন্য সেমি ইমার্সিভ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।এই প্রযুক্তি বেশিরভাগ বিভিন্ন ভিডিও গেমে ব্যবহৃত হয়।

Non Immersive:

কোন ভার্চুয়াল জগতকে তৈরি করা হবে, কিন্তু সেটা বাস্তব মুখী হবে না। এই ধরনের ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কে নন-ইমার্সিভ প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি করা হয়। বিভিন্ন ধরনের কার্টুন এবং ভিডিও গেম তৈরিতে এই প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়।

Augmented Reality:

অগমেন্টেড রিয়েলিটি  এমন একটি প্রকার যেখানে বিভিন্ন ক্যারেক্টার আপনার মনে হবে আপনার রুমের মধ্যে আছে, কিন্তু সত্যিকারে সেটা আপনার সাথে থাকবে না।

প্রাত্যহিক জীবনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রভাব:

  •  মেডিকেল প্রশিক্ষণ এবং প্র্যাকটিসে
  •  সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ এবং ট্রেনিং
  •  ভিডিও গেমে
  •  ইন্টারটেইনমেন্ট এর ক্ষেত্রে (যেমন: মুভি)
  •  ড্রাইভিং শেখার ক্ষেত্রে (ইত্যাদি)

শিক্ষা এবং বিভিন্ন ট্রেনিং এর ক্ষেত্রে এর ব্যবহার ফলে এক স্থানে কাজ অন্য স্থানে বসে করা যাচ্ছে। ট্রেনিং এবং প্রশিক্ষণের সময় আপনি সুরক্ষিত থাকবেন। একটি কাল্পনিক জগৎ তৈরি হওয়ার ফলে, আমরা সেই জগতকে অনুধাবন করতে পারি। আধুনিক গেমিং এর ক্ষেত্রে আপনি বাস্তবতার ছোঁয়া দিতে পারছেন।

এছাড়াও প্রাত্যহিক এর আরো অনেক প্রভাব রয়েছে। খুব অদূর ভবিষ্যতেই আমরা মেটাভার্সের দুনিয়ায় প্রবেশ করতে যাচ্ছি। যেটা ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সবচেয়ে বড় বিপ্লবের সাক্ষী হবে।

এখানে আমরা ঘরে বসেও বন্ধুদের সাথে বাইরে বসে আড্ডা দেওয়া, শপিং করা, খেলাধুলা করার অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি পেতে পারবো। এছাড়াও অনেক ইকমার্স সাইটে ভিআর প্রযুক্তি ব্যবহারের পরিকল্পনা চলছে। ফলে কোনো পণ্য কেনার পূর্বে আমরা সেটা হাতে নেওয়ার অনুভূতি পাবো, গুণগন মান যাচাই-বাছাই করতে পারবো।

ইতিকথা

আশা করবো এই সংক্ষিপ্ত আলোচনার মাধ্যমে আপনাদের জানার আগ্রহকে কিছুটা হলেও পূরণ করতে পেরেছি। এই লেখাটি পরবর্তীতে আপডেট করা হবে। আশা করি এই সম্পর্কে আপনাদের বিশেষ কোনো প্রশ্ন থাকলে তা কমেন্ট করা জানাতে পারেন। প্রশ্নের উত্তর আমাদের জানা থাকলে তা রিপ্লাই দিবো। আজকের লেখাটি এ পর্যন্তই। আপনার দিনটি শুভ হোক।

 

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *